Severity: Warning
Message: fopen(/var/cpanel/php/sessions/ea-php80/ci_sessione650c12db47735a70e58599954af0ae10c4ffe65): Failed to open stream: Disk quota exceeded
Filename: drivers/Session_files_driver.php
Line Number: 174
Backtrace:
File: /home8/kanthoco/public_html/index.php
Line: 316
Function: require_once
Severity: Warning
Message: session_start(): Failed to read session data: user (path: /var/cpanel/php/sessions/ea-php80)
Filename: Session/Session.php
Line Number: 143
Backtrace:
File: /home8/kanthoco/public_html/index.php
Line: 316
Function: require_once
আপডেট: ২০২৪-১০-৩০
দিনমজুর রাজনের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের পেয়ারাপুর গ্রামে। এক মাস আগেও গ্রামে মধ্যচরে ছিল তার সাজানো সংসার। বন্যায় তার বাড়িতে পানি উঠেছিল। তবে অক্ষত ছিল ঘরবাড়ি। বন্যার পানি নামার সময় ওয়াপদা খালের ভাঙনে বিলীন হয়েছে তার ঘর। সম্বল বলতেই ছিল বসতভিটা। এখন যাওয়ার মতো আরো কোনো জায়গা নেই। খালের পাড়ে টিনের বেড়ার ঘরে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। গত এক মাসে রাজনের মতো আরো পাঁচ শতাধিক পরিবার ওয়াপদা ও রহমতখালী খালের ভাঙনে বাস্তুহারা হয়েছে। বসতভিটা হারিয়ে খালের তীরেই অস্থায়ী ঘরে বাস করছেন অনেকে।
স্থানীয়রা জানান, ওয়াপদা ও রহমতখালী মিলেছে মেঘনা নদীতে। এ কারণে খালে স্রোতের তীব্রতা বেশি। বন্যার পর সদর উপজেলার টুমচর, দক্ষিণ কালিচর, ভবানীগঞ্জ ও লাহারকান্দি ইউনিয়নের পিয়ারাপুর, পশ্চিম সৈয়দপুর, চাঁদখালী ও মান্দারি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্রতিনিয়ত ভাঙছে। বিশেষ করে পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দুইপাড়ে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত এক মাসে বিলীন হয়েছে এসব এলাকার পাকা সড়ক, মসজিদ, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। ভেসে গেছে জলাশয়ের মাছ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁচ শতাধিক পরিবার।
এক মাসে বাস্তুহারা হয়েছে সদর উপজেলার পিয়ারাপুর গ্রামের ১৭টি পরিবার। বন্যায় ঘরবাড়ি টিকিয়ে রাখলেও ওয়াপদা খালের ভাঙনে শেষ রক্ষা হয়নি এসব পরিবারের। বাস্তুহারা আলেয়া বেগম, আবদুল্লা আল নোমান, আসমা ও দুলালসহ কয়েকজন বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও তাদের সাজানো সংসার ছিল। বাড়িঘর ছিল। সবাই মিলে বসবাস করেছি। বছরের পর বছর আমরা এখানে থেকেছি। সবকিছু খালে বিলীন হয়ে গেছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই পর্যন্ত নেই।’
পশ্চিম সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম জানান, রহমতখালী খালের ভাঙনে তিনবার ঘরবাড়িসহ চার একর জমি হারিয়েছেন তিনি। নতুন ঘরটি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
লাহারকান্দি ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সোলায়মানের বাড়ির পাশে রয়েছে তিন কিলোমিটার সড়ক। ওয়াপদা খালের স্রোতে সড়কের চার-পাঁচটি স্থান ভেঙে গেছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যানবাহন চলাচলসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা। এক বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিডি) অর্থায়নের সড়কটি নির্মাণ করা হয়।
লাহারকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন মোহাব্বত বলেন, ‘ইউনিয়নের পেয়ারাপুর, পশ্চিম সৈয়দপুর, চাঁদখালী, রামানন্দী গ্রামসহ প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বন্যার পর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এক মাসে এ অঞ্চলের পাঁচ শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে।’
সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ওয়াপদা খালের স্রোতে বিস্তীর্ণ জনপদে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে পশ্চিম মান্দারী গ্রামের মিয়াজান পাটোয়ারী বাড়ি জামে মসজিদ ও চাঁদখালী-আমিন বাজার সড়ক। ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মফিজুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘ওয়াপদা খাল মসজিদ থেকে প্রায় ২০০ ফুট দূরে ছিল। চার বছর ধরে খালটি ভেঙে চওড়া হয়েছে। যেকোনো সময় মসজিদটি বিলীন হয়ে যেতে পারে।’
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিংসহ ব্লক দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন। না হলে বিস্তীর্ণ জনপদ বিলীন হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান বলেন, ‘খালের পানির স্রোতে ৪-৫ কিলোমিটার এলাকা ভাঙনের মুখে পড়েছে। দুই একটি স্থানে অস্থায়ীভাবে জিও ব্যাগ ডাম্পিং কাজ শুরু করা হয়েছে। স্থায়ী তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুতই নির্মাণ করা হবে।’
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, ‘ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ও ব্লক দিয়ে ব্যবস্থা নিতে পাউবো কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ভাঙন রোধ কার্যক্রম তদারকির জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে একজন কর্মকর্তাও নিয়োগ করা হয়েছে। ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে বরাদ্দের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনসহ স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে।’
Developed By Muktodhara Technology Limited.