f

বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় লক্ষ্মীপুরের চাষীরা

 প্রতিবেদক

আপডেট: ২০২৪-১১-১২



বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় লক্ষ্মীপুরের চাষীরা

যে সময় শীতকালীন আগাম সবজি খেত থেকে তুলে বাজারে বিক্রির কথা, সে সময় সবজির আবাদের জন্য খেত প্রস্তুতের কাজ করছেন চাষীরা। গত দুই মাসে অতিবৃষ্টি ও দীর্ঘমেয়াদী বন্যায় লক্ষ্মীপুরে সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে খেতেই নষ্ট হয়েছে বিভিন্ন সবজির গাছ ও চারা। তবে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা।

কৃষকরা বলছেন, উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এবার বাজারে দেরিতেই আসবে স্থানীয় এ শীতকালীন সবজি। খরচের তুলনায় ন্যায্য দাম নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। তবে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের প্রণোদনার আশ্বাস দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ।

জানা যায়, প্রতি বছর আগাম বাজার ধরতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার টুমচর, কালিরচর, লাহারকান্দি ও ভবানীগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠের পর মাঠে শীতের আগাম সবজির আবাদ করে চাষীরা। সবজি চাষ করে লাভবান হওয়ায় আশায় তারা এবারো লাউ, বরবটি, ঢেঁড়স, লালশাক, মূলা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম ও করলার আবাদ করেছিলেন। তবে অপ্রত্যাশিত বন্যা ও বৃষ্টির কারণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

গত আগস্ট-সেপ্টেম্বর দুই মাসে অতিবৃষ্টি ও দীর্ঘমেয়াদী বন্যায় লক্ষ্মীপুরের শীতকালীন সবজি উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতি হয়। জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়েছে এসব খেতের সবজির গাছ ও চারা। বন্যার পানি নামলেও এখনো নিচু ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা থাকায় চাষাবাদ নিয়ে বিপাকে অনেক কৃষক। আবার খরচের তুলনায় ন্যায্য দাম নিয়েও আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।

কৃষকরা জানান, আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি সময় শীতের আগাম সবজি চাষ করে এ সময় এসে কয়েক দফায় বাজারে বিক্রি করে তাদের চালানের টাকাও উঠে যেত। কিন্তু অতিবৃষ্টি ও বন্যায় সব শেষ। ধারদেনা করে সবজির আবাদ নিয়ে এখন বিপাকে পড়েছেন তারা। কৃষক বাঁচাতে সরকারি ভাবে দ্রুত পুনর্বাসনের দাবি কৃষকদের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, লক্ষ্মীপুর জেলায় ৪ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজিসহ অন্তত ১২ প্রকার সবজির আবাদ করে চাষীরা। অতিবৃষ্টি ও বন্যায় এবার ১ হাজার ৩৯ হেক্টর জমির শীতকালীন সবজির খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চলতি বছর ৪ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সবজির আবাদ হয়েছে মাত্র ৭৩০ হেক্টর জমিতে।

সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়নের কালিরচর গ্রামের কৃষক সেকান্তর মিয়া জানান, দেড় লাখ টাকা খরচ করে এবার আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করেছিলেন তিনি। অসময়ে বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে ডুবে তার সব সবজি চারা নষ্ট হয়েছে। বন্যার পানি নামলেও খেত এখনো শুকায়নি। তবে আবারো শীতকালীন সবজির প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। এজন্য খেত নিড়ানির কাজে ব্যস্ত তিনি। ওই এলাকায় তার মতো কয়েকজন কৃষক একই ক্ষতির কথা জানিয়েছেন। তবে কৃষি বিভাগ থেকে সহায়তা দিতে তালিকা করা হলেও তারা কোন প্রণোদনা পাননি বলে জানিয়েছেন।

এদিকে লক্ষ্মীপুরে পরিবেশবিদ ও সাংবাদিক সানা উল্যাহ সানু বলেন, শীতের শুরুতে জেলার ৫টি উপজেলার বিভিন্নস্থানে বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সবুজ সবজিতে ভরপুর থাকতো। কিন্তু এখন বিস্তীর্ণ মাঠ খালি পড়ে আছে। বন্যা ও অতি বৃষ্টিতে খেতেই নষ্ট হয়েছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, বরবটি, লাউসহ কৃষকরা শীতকালীন আগাম সবজি খেত। এখন ধারদেনাই পরিশোধ করতে পারছেন না অনেক কৃষক। সঠিক তদারকির মাধ্যমে কৃষি প্রণোদনা পেলে কৃষক কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে বলে জানান তিনি।

লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন জানান, অতিবৃষ্টি এবং বন্যায় শীতকালীন সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে উফশী জাতের ফসলের জন্য প্রায় ২০ হাজার কৃষক ও হাইব্রিড জাতের ফসল আবাদের জন্য ৩৮ হাজার কৃষককে সরকারী ভাবে প্রণোদনার আওতায় আনা হচ্ছে। এজন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছে। খুব দ্রুত এ প্রণোদনা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে পৌঁছানো হবে। তবে শীতের মৌসুমেই শীতকালীন সবজির উৎপাদন ভালো হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।


A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: fwrite(): Write of 34 bytes failed with errno=122 Disk quota exceeded

Filename: drivers/Session_files_driver.php

Line Number: 265

Backtrace:

A PHP Error was encountered

Severity: Warning

Message: session_write_close(): Failed to write session data using user defined save handler. (session.save_path: /var/cpanel/php/sessions/ea-php80)

Filename: Unknown

Line Number: 0

Backtrace: