A PHP Error was encountered

Severity: Warning

Message: fopen(/var/cpanel/php/sessions/ea-php80/ci_session5a82a4a353b7ce9834068eda06a2854c57a3df59): Failed to open stream: Disk quota exceeded

Filename: drivers/Session_files_driver.php

Line Number: 174

Backtrace:

File: /home8/kanthoco/public_html/index.php
Line: 316
Function: require_once

A PHP Error was encountered

Severity: Warning

Message: session_start(): Failed to read session data: user (path: /var/cpanel/php/sessions/ea-php80)

Filename: Session/Session.php

Line Number: 143

Backtrace:

File: /home8/kanthoco/public_html/index.php
Line: 316
Function: require_once

সড়কে ‘জীবন্ত বোমা’, নিশ্চুপ পুলিশ ও বিআরটিএ
f

সড়কে ‘জীবন্ত বোমা’, নিশ্চুপ পুলিশ ও বিআরটিএ

 প্রতিবেদক

আপডেট: ২০২৪-১১-৩০



সড়কে ‘জীবন্ত বোমা’, নিশ্চুপ পুলিশ ও বিআরটিএ

 

মাজহারুল আনোয়ার টিপু

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই লক্ষ্মীপুরে অবাধে চলাচল করছে ফিটনেসবিহীন যানবাহন। মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করেই সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বেশির ভাগ যানবাহন। অভিযোগ রয়েছে, যানবাহনে মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার রেখেই দেয়া হয় ফিটনেস সনদ। নেই কোনো তদারকি। ভয়াবহ বিস্ফোরণসহ নানান ধরণের মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই এসব গাড়িতে চলাচল করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে সিএনজিচালিত যানবাহনের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। এরমধ্যে বেশিরভাগেরই নেই ফিটনেস সনদ। আবার এসব যানবাহনে ব্যবহৃত হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার। অথচ পাঁচ বছর পর পর এসব গ্যাস সিলিন্ডার পরীক্ষা করানোর নির্দেশনা থাকলেও, তা মানছেনা কেউ।

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটির (বিআরটিএ) তথ্য মতে, লক্ষ্মীপুরে রেজিস্টেশন করা শুধু সিএনজি চালিত অটোরিকশাই রয়েছে ৮ হাজার। এরমধ্যে ৭ হাজারের বেশি অটোরিকশার নেই ফিটনেস সনদ।

স্থানীয়রা বলছেন, ফিটনেসবিহীন এসব যানবাহনে ব্যবহৃত মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার যেনো এক একটি ‘জীবন্ত বোমা’। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বিষ্ফোরণ, তা জেনেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জীবন-জীবিকার তাগিদে ওইসব যানবাহনে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের।

এজন্য প্রশাসনের নজরদারির অভাবকেই দুষলেন তারা।

গত ১৪ অক্টোবর জেলা শহরের মুক্তিগঞ্জ এলাকায় গ্রীণ লিফ ফিলিং স্টেশনে লক্ষ্মীপুর থেকে রামগতি সড়কে চলাচলকারী একটি বাসে গ্যাস নেয়ার সময় সিলিন্ডারে বিষ্ফোরণ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। আহত হন অন্তত ১৫ জন। এদিকে খোদ চালকরাই স্বীকার করছেন যে, বিআরটিএ, ট্রাফিক পুলিশ ও গ্যাস ফিলিং স্টেশনে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই তারা যানবাহন চালাচ্ছেন।

 

লক্ষ্মীপুর গ্রীণ লিফ গ্যাস ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক আল আমিন হোসেন বলেন, ‘সবসময় গাড়ির চাপ বেশি থাকায় গ্যাস ফিলিং করার সময় সব যানবাহনের সিলিন্ডারের কাগজপত্র পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না। এজন্য পুলিশ প্রশাসন ও বিআরটিএর নজরদারি বাড়ানো দরকার।’

জেলা শহরের বাসিন্দা ও লক্ষ্মীপুর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান সবুজ সময় সংবাদকে বলেন, ‘লক্ষ্মীপুরে অধিকাংশ সিএনজির ফিটনেস নেই। অনেক ক্ষেত্রে তাদের যে গ্যাস সিলিন্ডার সেটিও মেয়াদোত্তীর্ণ। আমরা জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে ঝুঁকি জেনেও এসব যানবহন ব্যবহার করছি। পুলিশ প্রশাসন যদি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ না করে, তাহলে আমাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। আমরা এই ঝুঁকি থেকে কোনোভাবেই বাঁচতে পারবো না। এমন বাস্তবতায় পুলিশ প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।’

 

জেলা শহরের বাঞ্চানগর এলাকার বাসিন্দা কাউছার বলেন, ‘ঝুঁকি আছে জেনেও ওইসব ফিটনেসবিহীন যানবাহনে প্রয়োজনের তাগিদে চলাচল করতে হয় আমাদের। এসব গাড়িতে আবার ব্যবহার হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার। সবসময় আতঙ্কে থাকি, এই বুঝি কোনো দুর্ঘটনা শিকার হচ্ছি।’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ট্রাফিক পুলিশের নীরবতার কারণেই সড়কে অবাধে চলাচল করছে ফিটনেসবিহীন যানবাহন। আর অদৃশ্য কারণে এইসব যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছেনা পুলিশ।’

লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী সুমন দাস বলেন, ‘আমরা সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন ফিটনেসবিহীন গাড়িতে যখন চলাফেরা করি, তখন ঝুঁকি নিয়েই চলতে হয়। এতে বিভিন্ন সময় ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এসব বিষয়ে বিআরটিএ কোন ব্যবস্থা না নেয়ার কারণেই সড়কে অবাধে চলছে ফিটনেসবিহীন যানবাহন।’

এদিকে পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, ‘সারা বছর নজরদারি না থাকলেও ফিটনেস পরীক্ষার সময় তৎপর হয়ে ওঠেন বিআরটিএর কর্মকর্তারা। তবে তাদের ম্যানেজ করেই বৈধতা নেয়া হয় যানবাহনের।’

সিএনজি অটোরিকশা চালক মোরশেদ বলেন, ‘ফিটনেস এগুলি তো আমরা বুঝিনা। আমরা টাকা দিয়ে গাড়ি চালাই। পুলিশে ধরলেই টাকা নিয়ে গাড়ি ছেড়ে দেয়। টাকা দিলেই সব মামলা মাফ।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘গ্যাস ফিলিং স্টেশনেও ২০ থেকে ৩০ টাকা দিলেই সিলিন্ডারের মেয়াদ না দেখেই গ্যাস দিয়ে দেয়।’

সিএনজিচালক মামুন বলেন, ‘গাড়ির ফিটনেস থাকলেও পুলিশকে টাকা দেয়া লাগে, না থাকলেও টাকা দেয়া লাগে। এইভাবেই আমরা সড়কে গাড়ি চালাই।’ তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমরা গাড়ির কাগজপত্র কিভাবে করবো? বিআরটিএতো আমাদেরকে কোনো ছাড় দেয় না। সেখানে গেলেও টাকা ছাড়া মিলে না কোনো সেবা।’

লক্ষ্মীপুর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘গ্যাস সিলিন্ডারের মেয়াদ দেখেই ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয়া হয়। ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও বিআরটিএর যৌথ সমন্বয়ে আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি।’

সড়কে চলাচলকারী অধিকাংশ গাড়িরই ফিটনেস নেই উল্লেখ করে বিআরটিএর এ কর্মকর্তা বলেন, গাড়ির মালিক ও চালকদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করার পরিকল্পনা রয়েছে। যেনো তারা গ্যাস সিলিন্ডার রিটেস্ট না করে রাস্তায় গাড়ি না চালান।

এদিকে লক্ষ্মীপুর ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) প্রশান্ত কুমার দাশ বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নিয়মিত চেকপোস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। আমাদের নজরে যা আসে, আমরা মামলা দিচ্ছি। সড়কের চলাচলকারী ফিটনেসবিহীন যে কোনো যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে তৎপর রয়েছে পুলিশ।’